১. নবীদের কাহিনী ১ ২. নবীদের কাহিনী ২ ৩. নবীদের কাহিনী ৩ প্রকাশকের নিবেদন আশরাফুল মাখলূক্বাত মানবজাতির কল্যাণে প্রেরিত বিধান সমূহ প্রচার ও প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে আদম (আঃ) থেকে মুহাম্মদ (ছাঃ) পর্যন্ত যুগে যুগে যে অসংখ্য নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছেন, তাঁদের মধ্য থেকে মাত্র পঁচিশজন নবীর নাম আল্লাহ পবিত্র কুরআনে গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করেছেন এবং সত্যের পথে তাঁদের দৃঢ়চিত্ত সংগ্রামের হৃদয়গ্রাহী কাহিনী বর্ণনা করে মানবতার সামনে সত্য, ন্যায় ও সুন্দরের অনুপম মানদণ্ড উপস্থাপন করেছেন। এসব কাহিনী কেবল চিত্তবিনোদনের খোরাক নয় বরং এক অবিরাম বিচ্ছুরিত আলোকধারা, যার প্রতিটি কণায় বিকশিত হয় মানবতার সর্বোচ্চ নমুনা। নবী ও রাসূলগণের জীবনালেখ্য জানা ও তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, বাংলা ভাষায় এ সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস খুবই দুর্লভ। তাই বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে মাননীয় লেখক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব বগুড়া জেলা কারাগারে অবস্থানকালে পবিত্র কুরআনের তাফসীর ও মিশকাতুল মাছাবীহের অনুবাদ ও ব্যাখ্যা রচনার ফাঁকে ফাঁকে এই মূল্যবান পাণ্ডুলিপিটি সমাপ্ত করেন। মুহতারাম লেখক এই ইতিহাস রচনায় কেবল বিশুদ্ধ সূত্রগুলোরউপর নির্ভর করেছেন এবং যাবতীয় ইসরাঈলী বর্ণনা ও সমাজে প্রচলিত নানা উপকথা ও ভিত্তিহীন কেচ্ছা-কাহিনী থেকে সর্বতোভাবে মুক্ত থাকার চেষ্টা করেছেন। তাঁর সবচেয়ে মূল্যবান সংযোজন হ’ল আম্বিয়ায়ে কেরামের জীবনী থেকে বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে শিক্ষণীয় বিষয়সমূহ পাঠকের সামনে তুলে ধরা। মার্চ’১০-যে ১৩জন নবীর জীবনী নিয়ে ১ম খণ্ডের ‘প্রথম সংস্করণ’ বের হবার পর কয়েক মাসের মধ্যে সব কপি শেষ হয়ে যায়। এবারে ২য় সংস্করণে কিছু সংযুক্তি ও বিযুক্তি ছাড়াও বইয়ের শেষে ‘প্রশ্নমালা’ সংযোজন করা হয়েছে, যা ব্যস্ত পাঠক ও শিক্ষক-ছাত্রদের জন্য সহায়ক হবে। বাকী ১১ জন নবীর জীবনী নিয়ে ২য় খন্ড এবং শেষনবী মুহাম্মদ (ছাঃ)-এর জীবনী নিয়ে ৩য় খণ্ড সত্বর বের হবে ইনশাআল্লাহ। আমরা দৃঢ় আশাবাদী যে, এর মাধ্যমে পাঠকসমাজ মানবজাতির প্রাচীন ইতিহাসের পাদপীঠে নিজেদেরকে নতুনভাবে মূল্যায়ন করতে সক্ষম হবেন এবং নবীগণের উন্নত জীবনকে উত্তম আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করার প্রেরণা লাভ করবেন। পরিশেষে সুলিখিত এ গ্রন্থটির বিজ্ঞ রচয়িতার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং প্রকাশনার সাথে জড়িত সকলকে মোবারকবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সকলকে ইহকালে ও পরকালে উত্তম জাযা দান করুন- আমীন!! প্রকাশক
“নবীদের কাহিনী ৩” বইয়ের প্রধান সূচি: প্রকাশকের নিবেদন পূর্বকথা ভূমিকা সীরাত শাস্ত্রের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ * আরব জাতি * মক্কা ও ইসমাঈল বংশ ১ম ভাগ: মাক্কী জীবন * শৈশব থেকে নবুঅত * নুযূলে কুরআন ও নবুঅত লাভ * দাওয়াতী জীবন * বিরোধিতার কৌশল সমূহ * রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর উপর নানামুখী অত্যাচার * ছাহাবীগণের উপরে অত্যাচার * হাবশায় হিজরত * আবু ত্বালিবের নিকটে কুরায়েশ নেতাদের আগমন * হামযার ইসলাম গ্রহণ * ওমরের ইসলাম গ্রহণ * সর্বাত্মক বয়কট * আবু ত্বালিব ও খাদীজা (রাঃ)-এর মৃত্যু * ত্বায়েফ সফর * বহিরাগতদের ইসলাম গ্রহণ * আক্বাবাহর বায়’আত * ইসরা ও মি’রাজ * ছাহাবীগণের ইয়াছরিবে কষ্টকর হিজরত শুরু * রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর হিজরত * গৃহ থেকে গুহা- কিছু ঘটনাবলী ২য় ভাগ: মাদানী জীবন * মদীনার সামাজিক অবস্থা * ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার গোড়াপত্তন * যুদ্ধের অনুমতি * অভিযান ও যুদ্ধ সমূহ * বদর যুদ্ধ
বাংলাদেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ ইসলামী চিন্তাবিদ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। ১৯৪৮ সালের ১৫ জানুয়ারী সাতক্ষীরার বুলারাটি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মাওলানা আহমাদ আলী বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একজন বিখ্যাত আহলে-হাদিস আলেম ছিলেন। তাঁর শিক্ষাজীবনের শুরু সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা সিনিয়র মাদরাসা থেকে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি দাখিল, আলিম ও ফাযিল এবং জামালপুর থেকে ১৯৬৯ সালে কামিল পরীক্ষা কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে মাদরাসা বোর্ডে আলিম ও কামিল পরীক্ষায় অসাধারণ কৃতিত্ব দেখান যথাক্রমে ১৬তম ও ৫ম হয়ে। অতঃপর তিনি কলারোয়া সরকারি কলেজ থেকে আইএ এবং খুলনার সরকারি মজিদ কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। পিএইচডি গবেষণার জন্য ইংল্যান্ডে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ অর্জন করলেও পরবর্তীতে আর যাননি। অতঃপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯২ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজে খন্ডকালীন লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। একই বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ও ইসলাম শিক্ষা বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। এই বিভাগ থেকেই ২০১৬ সালে অবসর নেন। তিনি লেখালেখি করেন রাজনীতি, অর্থনীতি্ সাহিত্য, রাষ্ট্রনীতি, ধর্ম প্রভৃতি বিষয়ে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকায় তাঁর প্রকাশিত প্রবন্ধ-নিবন্ধের সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক ছাড়িয়েছে। তিনি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ‘আহলে-হাদীস আন্দোলন-বাংলাদেশ’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান আমীর। মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব এর বই সমূহ মূলত ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়, আহলে-হাদীস আন্দোলন, নবী-রাসূলদের জীবনী, ইসলামি খেলাফতের প্রাচীন ও বর্তমান অবস্থার দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এই ইসলামি চিন্তাবিদ ও গবেষক পেশাগত কাজে দেশে-বিদেশে ভ্রমণ করেছেন। আরবি, ফার্সি, উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় তাঁর দক্ষতা রয়েছে। পাঠক সমাদৃত মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব এর বই সমগ্র হলো ‘আহলে হাদীস আন্দোলন কী ও কেন’, ‘জীবন দর্শন’, ‘ইনসানে কামেল’, ’ছালাতুর রাসূল (ছাঃ), ‘তিনটি মতবাদ’ ইত্যাদি। ২০০০ সালে সৌদি সরকারের রাজকীয় মেহমান হিসেবে হজব্রত পালন করেন তিনি।